অনলাইন ডেস্ক: লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত এ দেশে কোনো সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের অবমাননা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী কোটি বাঙালির হৃদয়ে আঘাত বলে মন্তব্য করেন সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, এ দেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং অর্জনের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীলরা চ্যালেঞ্জ। এর নেপথ্যে যারা মদদ এবং অর্থের জোগান দিচ্ছে তাদেরও খুঁজে বের করা হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, এখনো হচ্ছে। এখন হঠাৎ করে আবার বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা চলছে, তাদের জনস্বার্থে কঠোর হস্তে দমন করা হবে।
ভাস্কর্য ইস্যুতে দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক কোনো ষড়যন্ত্র আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী ধর্মকে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সমর্থন দিয়ে বিএনপি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। তারা ইতিমধ্যেই এর প্রমাণ করেছে এবং তারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী বলয়ের পৃষ্ঠপোষক।
দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে কিছু কিছু ভাস্কর্যের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ছবির মিল থাকছে না। কখনো কখনো নকশা বা ডিজাইনেরও ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। তাই ভাস্কর্য নির্মাণে বঙ্গবন্ধু ট্রাস্টের অনুমতি গ্রহণ ছাড়া ভাস্কর্য নির্মাণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তাফা ওসমান তুরান সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এ সময়ে বাংলাদেশ ও তুরস্কের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অনেক পুরোনো এবং অভিন্ন বিশ্বাসের ওপর প্রতিষ্ঠিত মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ও তুরস্ক উদার গণতন্ত্র চর্চায় বিশ্বাসী। ইউরোপ ও এশীয় সংস্কৃতির সংযোগস্থল তিন সমুদ্রের দেশ তুরস্ক। দু’দেশের মাঝে রয়েছে সাংস্কৃতিক বিনিময় কার্যক্রম।
এ সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অদম্য গতিতে এগিয়ে যাওয়া এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও কভিড পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ সামাজিক খাতের উন্নয়নে তুরস্ক সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত।
তিনি জানান, ২০১৮ সালে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তুরস্কের আঙ্কারায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য এবং ঢাকায় কামাল আতাতুর্কের ভাস্কর্য স্থাপনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
অর্থনীতি, অবকাঠামো, কর্মসংস্থান এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার আরও সুযোগ রয়েছে বলে এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন সেতুমন্ত্রী।