অনলাইন ডেস্ক: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ একটি ভালো কাজ। এতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উপকার হবে। কিন্তু এ সেতু নির্মাণ করতে কত টাকা খরচ করেছে তার হিসাব জনগণের সামনে উপস্থাপন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই’।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সার্বভৌমত্ব রক্ষা পরিষদের প্রথম প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মান্না বলেন, ‘আপনারা বলছেন, নিজের টাকায় পদ্মা সেতু করছেন। আপনারা চীন থেকে ঋণ নেন নাই? ঋণ নিয়েছেন ৪ শতাংশ’।
তিনি বলেন, ‘ভারতের আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে ৯ কিলোমিটার সেতু নির্মাণ করতে ১১৮০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতু বানাতে ইতিমধ্যে ৩০ হাজার কোটি টাকা শেষ। আরো কত টাকা লাগবে বলা যাচ্ছে না। যে ৬০-৭০ হাজার কোটি টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন, জনগণের কাছে সেই হিসাব দেবেন? প্রতি বছর দেশ থেকে যে পরিমাণ টাকা পাচার হয় তা দিয়ে প্রতি বছর একটি করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব’।
মান্না বলেন, ‘বর্তমান সরকার স্বৈরাচারী সরকার। শেকড় থেকে স্বৈরাচারী সরকারকে উপড়ে ফেললেই দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা হবে। অবৈধ ও ভোট চোর সরকার নাগরিকের অধিকার রক্ষা করতে পারে না। সরকারকে টিকিয়ে রেখেছে পুলিশ। আজ যদি ওসিরা বলেন, আমরা ডিউটি করতে পারব না, তাহলে দেখবেন, এই সরকার পালানোর পথ পাবে না’।
তিনি বলেন, ‘সরকার মানুষের জীবনের মূল্য দিতে পারেনি। নারীর সম্মান নষ্ট করেছে। রোহিঙ্গা সামলাতে পারেনি। বিদেশে টাকা পাচার করেছে। ক্ষমতায় থাকতে চুরি করে ভোটের অধিকার হরণ করছে। এই যে জুলুম চলছে, অনেককে গুম করা হয়েছে। আমরাও যে কোনো সময় এর শিকার হতে পারি’।
মান্না বলেন, ‘যারা বলেন, এই সরকার বেশি দিন টিকে থাকবে না। আমি বলি, পৃথিবীতে ৩৪ বছর ফ্যাসিবাদ টিকে ছিল। মিসরের হোসনি মোবারক টিকে নাই ? আমি বলব, ফ্যাসিবাদ উৎখাত করতে স্বৈরাচারের শেকড় উপড়ে ফেললেই সার্বভৌমত্ব রক্ষ হবে’।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘আজ জাতির ঘাড়ে চরম স্বৈরশাসক বসে আছে। জোর করে ক্ষমতায় থাকার এমন নজির পৃথিবীতে খুবই কম। মানুষের ভোটের অধিকার হরণ করছে। এ দেশ আওয়ামী লীগের কাছে লিজ দেওয়া হয় নাই’।
সার্বভৌমত্ব রক্ষা পরিষদের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক সুভাষ চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মীর হেলাল প্রমুখ।